Friday, October 23, 2009

প্রতিদিনের জীবনে দোয়া’র উপকারিতা এবং এর গুরুত্ব

একজন মুসলমান তার জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে তার সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর দরবারে মাথা নীচু করবে, ইহকাল ও পরকালের নিরাপত্তা প্রার্থনা এবং মুক্তি লাভের আশায় কেবলমাত্র তাঁর কাছে আবেদন নিবেদন করবে, বস্তুতঃ মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন এটাই চান। তিনি চাওয়া ও প্রার্থনা পছন্দ করেন; তার বান্দারা তার কাছে ফরিয়াদ করুক, সুখের দিনে তাঁর নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করুক, দুঃখ দৈন্যের সময় তাঁরই দয়া ও করুনা ভিক্ষা করুক। আর এই চাওয়াটা হচ্ছে আল্লাহর সুদৃষ্টি লাভের প্রধান সোপান। ‘দোয়া’ অর্থ ডাকা। দোয়া করা হচ্ছে আল্লাহর কাছে পবিত্র নিয়তে হালাল প্রয়োজনে সাহায্য চাওয়া। প্রকৃতপক্ষে, দোয়ার মাধ্যমে একজন মুসলমান তার নিজের দীনতা প্রকাশ করে আল্লাহর রহমত লাভ করে, পাপীরা পাপ মুক্ত হয় আর মুমিনদের মর্যাদা আরও উন্নত হয়। এককথায় দোয়ার বরকতে মানুষ ইহকাল ও পরকালে কল্যান লাভ করে।

পবিত্র কুরআনে আল্লাহ বলেছেন, “তোমরা আমাকে ডাকো আমি সাড়া দেবো। যারা আমার ইবাদতে অহংকার করে তারা সত্ত্বরই জাহান্নামে দাখিল হবে লাঞ্ছিত হয়ে।” ( সুরা মুমিন আয়াত-৬০)মানুষ আশরাফুল মাখলুকাত বা সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব। আল্লাহ তাঁর সব সৃষ্ট জীবের উপর মানুষকে মযররাদাশীল করেছেন। পবিত্র আল-কুরআনের বিভিন্ন জায়গায় অসংখ্য আয়াতে আল্লাহ মানুষকে শিখিয়ে দিয়েছেন কিভাবে ইবাদত ও দোয়া করতে হবে। উদাহরনস্বরুপ, সুরা বাকারার ১৫৩ নং আয়াতে আল্লাহ বলেছেন, “হে মুমিনগণ ধৈর্য্য ও সালাতের মাধ্যমে তোমরা সাহায্য প্রার্থনা করো। আল্লাহ ধৈর্য্যশীলদের সাথে আছেন।” হাদিস শরীফেও দোয়ার গুরুত্ব ও ফজিলত সুন্দরভাবে বর্নিত হয়েছে। একটি হাদিসে রাসুল (সাঃ) বলেছেন, “আল্লাহর কাছে দোয়ার চেয়ে বেশি কোন বস্তু সম্মানিত ও মহৎ নয়।”(তিরমিযী) তিনি আরও বলেছেন, “দোয়া ইবাদতের নির্যাস।”(তিরমিযী) অন্য আরেকটি হাদিস থেকে আমরা জানতে পারি, “যে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে না, আল্লাহ তার প্রতি ক্রুদ্ধ হোন।”(তিরমিযী)
ক্ষুধাতৃষ্ণা মেটানোর জন্য আমরা পানাহার করে থাকি। আমাদের অসংখ্য পাপ সত্ত্বেও যিনি আমাদের রিজিক দান করেছেন সেই আল্লাহকে স্মরন করতে আমরা যদি খাওয়ার পুর্বে ও পরে দোয়া পড়ি তাহলে আল্লাহ আমাদের অনুগ্রহ করবেন এবং তাঁর ইবাদতের জন্য সেই আহার থেকে আমরা প্রয়োজনীয় দৈহিক শক্তি সঞ্চয় করতে পারবো। একইভাবে, লজ্জা নিবারণের জন্য, শীত গ্রীষ্মের প্রতিকুল অবস্থা থেকে আত্মরক্ষার জন্য আমরা পোশাক পরি। আমরা যদি পোশাক পরার সময় এ সম্পর্কে যে দোয়াটি আছে তা পড়ি তাহলে একসঙ্গে আল্লাহর দেয়া নেয়ামতের জন্য তাঁর শুকরিয়া আদায় করা হবে আর সেইসাথে তাঁকে স্মরন করাও হবে।
এভাবে প্রতিদিনের প্রতিটি কাজে বা বিশ্রামের প্রতিটি ক্ষণে দোয়া পড়লে আমাদের অন্তর কখনও আল্লাহর স্মরন হতে বিরত থাকতে পারবে না এবং শয়তানও আমাদের প্রলোভিত করার সুযোগ পাবে না। কাজেই, আমাদের উচিত বেশি বেশি আল্লাহকে স্মরন করা আর বিশেষ বিশেষ দোয়া পড়ে একজন প্রকৃত মুমিন হিসাবে তাঁর প্রতি আনুগত্যের পরিচয় দেয়া।

No comments:

Post a Comment